অধ্যায়: তালিমুদ্দিন এখন মহাশূন্যে ভাসে

ভোররাত পেরিয়ে গেলেও আলো ওঠেনি।
তালিমুদ্দিনের ঘর এখন আর সমুদ্রের ওপর নয়—
সে ভাসছে এক অদ্ভুত শূন্যতায়,
যেখানে শব্দ নেই, বাতাস নেই, এমনকি সময়ও নেই।

সেই শূন্যতার মধ্যে
তালিমুদ্দিন নিজের অস্তিত্ব টের পায় না,
সে শুধু টের পায়—
সে ভাবছে।

“আমি কি এখনো মানুষ?”
তার ভাবনায় প্রশ্ন আসে।
“না কি আমি এখন একটা চিন্তা মাত্র,
ভেসে বেড়ানো এক সম্ভাবনা?”

আচমকা, দূরে কোথাও
একটি আলোর বিন্দু ফুটে ওঠে,
যেমন করে শিশুকালের কোনো ভোলা গলির স্মৃতি মনে পড়ে যায়।

সে দেখতে পায়, সেই আলোতে
তার বাবা বসে আছে হারমোনিয়াম হাতে,
মা দাড়িয়ে আছে পেছনে, হাতে রান্নার হাঁড়ি।

তালিমুদ্দিন চিৎকার করে উঠতে চায়, কিন্তু মহাশূন্যে শব্দেরও অনুমতি নেই।
তবুও, চিন্তার মাধ্যমে সে ডাক দেয়—
“তোমরা কি এখনো আমার মধ্যে আছো?”

আলো টুকু ধীরে ধীরে নেমে আসে তার ভাসমান দেহের পাশে।
তালিমুদ্দিন বুঝতে পারে—
সে এখন মহাজাগতিক স্মৃতির মধ্য দিয়ে চলেছে,
যেখানে প্রতিটি নক্ষত্র একেকটি পুরোনো কথা,
যা সে বলেছিল, কিংবা চেপে গিয়েছিল।