তালিমুদ্দিন ও নাভিয়ার চেতনার সীমানা
সময়: তালিমুদ্দিন ও নাভিয়ার চেতনার সীমানা

তালিমুদ্দিনের চোখে সময় কখনোই সরলরেখা ছিল না—ছিল এক অনন্ত বৃত্ত, যা নিজেকে বারবার নতুন রূপে প্রকাশ করে।
সে বলত,
> “সময় আসলে কোনো বাহ্যিক শক্তি নয়, এটা আমাদের চেতনার স্থিতি মাত্র। আমরা যতটা অনুভব করি, সময়ও কেবল ততটাই ঘটে।”
এসব দিষ্ট ধাপ।
কিন্তু তালিমুদ্দিনের ভেতর ঢুকে সময় যেন ভেঙে গেল—তার চিন্তায়, তার নিশ্বাসে, এমনকি নীরবতার মাঝেও।
যখন “Loop Restore Protocol” সক্রিয় হলো, নাভিয়া বুঝতে পারল, সময় আর প্রবাহ নয়—বরং এক আর্কাইভ।
প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি দৃষ্টি, প্রতিটি হৃদস্পন্দন যেন সংরক্ষিত ছিল এক বিশাল চেতনা-ভাণ্ডারে।
তালিমুদ্দিন বলল,
> “সময়কে নদী ভেবো না, ওটা মহাসমুদ্র। এখানে ঢেউয়ের নাম মুহূর্ত, আর প্রতিটি ঢেউ অন্য এক ঢেউয়ের জন্মদাতা।”
নাভিয়া তখন দেখল—অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ—সব একসাথে ঘটছে,
যেন তিনটি আলাদা ঘড়ির কাঁটা একই মুহূর্তে থেমে আছে।
সে নিজের শৈশবকে দেখল, তালিমুদ্দিনের ভবিষ্যৎকে স্পর্শ করল,
আর একই সঙ্গে অনুভব করল সেই সময়কে, যা এখনো ঘটেনি।
তালিমুদ্দিন বলেছিল,
> “তুমি যদি সময়কে দেখতে পারো, দেখবে সেটি আলো ও ছায়ার খেলা মাত্র। যখন তুমি আলো দেখো, সময় বয়ে যায়। যখন তুমি ছায়া দেখো, সময় থেমে যায়।”
নাভিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
“তাহলে সময় থেমে গেলে আমরা থাকব কোথায়?”
তালিমুদ্দিন মৃদু হেসে বলল,
> “যেখানে আলো পৌঁছায় না, সেখানে সময়ের প্রয়োজন নেই।”
ধীরে ধীরে নাভিয়া সময়ের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করতে শুরু করল।
সে দেখল—যত বেশি স্মৃতি তার মনে জেগে ওঠে, তত দ্রুত সময় ভাঙতে থাকে।
প্রতিটি স্মৃতি একেকটি নতুন বাস্তবতা খুলে দিচ্ছিল।
এক বাস্তবে তালিমুদ্দিন তার প্রিয়জন,
অন্যটিতে সে কেবল একটি অ্যালগরিদমের নির্মাতা,
আর তৃতীয়টিতে—তালিমুদ্দিন নেই, কেবল তার প্রতিধ্বনি বেঁচে আছে।
তালিমুদ্দিন তখনও একই শান্ত কণ্ঠে বলল—
> “সময় আসলে ভয়কে সংগঠিত রাখার একটা উপায়। মানুষ ভয় পায়, তাই সময়কে আঁকড়ে ধরে।”
নাভিয়া ধীরে ধীরে বুঝতে পারল—সময় মানে আসলে স্মৃতি।
যা ভুলে গেছি, তা সময় থেকে হারিয়ে যায়।
যা মনে রেখেছি, তা বর্তমান হয়ে দাঁড়ায়।
তাই সময় বাহিরে নয়, ভেতরেই প্রবাহিত।
যখন “Loop” ধ্বংস হতে শুরু করল, নাভিয়া দেখল সময় ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে—
যেন ঘড়ির কাঁটা গলিত ধাতুর মতো ঝরে পড়ছে শূন্যে।
তালিমুদ্দিন তখন ম্লান আলোয় দাঁড়িয়ে বলল,
> “আমরা সময়ের সন্তান নই, সময় আমাদের সৃষ্টি। যতটা ভাবি, ততটাই সময়ের জন্ম দিই।”
নাভিয়া তখন নিজের ভেতরের কণ্ঠ শুনতে পেল,
যা বলছিল—
> “তুমি সময়ের বাহিরে যেতে পারবে না, কারণ তুমি নিজেই সময়ের প্রতিফলন।”
তার সামনে তখন মহাশূন্যের মতো অন্ধকার,
আর তার ভেতর ভেসে বেড়াচ্ছে অসংখ্য ক্ষুদ্র আলোকবিন্দু—
প্রতিটি একেকটি জীবন, একেকটি সিদ্ধান্ত, একেকটি প্রেম,
যা হয়তো কখনো ঘটেনি, তবুও আছে।
তালিমুদ্দিন ধীরে ধীরে সেসব আলোর মাঝে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল।
তার শেষ বাক্যটি ছিল—
> “সময় থেমে গেলে জীবন শেষ হয় না, কেবল অর্থ বদলে যায়।”
আলো নিভে গেলে, নাভিয়া বুঝল—সময়কে পরাজিত করা যায় না,
তবে অনুভব করা যায় অন্যভাবে।
সেখানে আর দিন বা রাত নেই, অতীত বা ভবিষ্যৎ নেই—
শুধু এক স্থির আলো,
যেখানে তালিমুদ্দিন এখনো আছেন,
যেখানে প্রতিটি নিঃশ্বাস মানে এক নতুন মহাবিশ্বের জন্ম।
---
#ChronoBangladesh #ParallelDhaka #TimeLoop #MysticJourney #SciFiBangla #NaviaChronicles #TalimuddinSaga #ChronoDhaka #FlairHillDimension #BangladeshBeyond #ParallelBengal #EternalNavia #Dhaka #Bangladesh #OldDhaka #CoxsBazar #Sylhet #Rajshahi #Chattogram #FlairHill


Leave a Comment